ট্রাম বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে, রানুছায়া মঞ্চে ট্রামের উপর অংকন ও কবিতা প্রতিযোগিতা
গতকাল ১৯শে জানুয়ারী রবিবার, ঠিক দুপুর একটাই, রবীন্দ্র সদন সংলগ্ন রানুছায়া মঞ্চে, ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে, ট্রাম তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে, অঙ্কন ও কবিতা প্রতিযোগিতা আয়োজন করেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে থেকে শুরু করে কবি ও সাহিত্যিকরা অংশগ্রহণ করেন এই মঞ্চে। আজকের বিষয় ছিল ট্রামেকে নিয়েই অংকন এবং কবিতার আয়োজন, অবহেলিত ও বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রামকে নিয়েই এই প্রতিবাদ।
শুধু তাই নয় শিল্পীরা একটি সুন্দর ট্রামের মডেল তৈরি করেও মানুষের সামনে তুলে ধরেছন, ট্রাম যেন পুনরায় ফিরে আসে।
আজকের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, বুদ্ধিজীবী মঞ্চের রুদ্র প্রকাশ সেনগুপ্ত ও দিলীপ চক্রবর্তী , প্রাক্তন এম পি ডক্টর তরুণ মন্ডল, ক্যালকাটা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডক্টর দেবাশীস ভট্টাচার্য ছাড়াও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
তাহাদের প্রধান বক্তব্য, হাইকোর্টের রায় মেনে ট্রামকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে হবে, কলকাতার ঐতিহ্যকে নষ্ট করা চলবে না, এবং ট্রামে জমি মাফিয়া দের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না, শুধু তাই নয় অযৌক্তিকভাবে ট্রাম রুট আটকানো চলবে না, যদি ট্রামরুট আটকে নিজেদের কার্যসিদ্ধি করে সেক্ষেত্রে যোগ্য অপরাধী হিসেবে গণ্য করতে হবে। তাহাদের জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে।
এই সকলের বিরুদ্ধে, এবং আস্তে আস্তে ট্রাম কমিয়ে দেওয়া বিভিন্ন রূপ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালাচ্ছি লড়াই চালিয়ে যাব, তাই জনগণকে সজাগ করতেই আজকের এই প্রতিযোগিতা, যেনো কেউ পুরনো ঐতিহ্যকে ভুলে না যায়, বিভিন্ন ট্রাম ডিপোগুলোতে শয়ে শয়ে ট্রাম পড়ে নষ্ট হচ্ছে, রাজ্যের ক্ষতি হচ্ছে, তবুও সরকারের বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ নাই, উদাহরণস্বরূপ তারা বলেন অন্যান্য দেশগুলিতে ট্রাম চলছে, কিন্তু আমাদের দেশে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে টানকে বন্ধ করার চেষ্টা করছে , আমরা তা হতে দেব না।
তাহারা বলেন ট্রাম রাস্তা জ্যাম করে না, একটি নির্দিষ্ট পথ দিয়ে যায়, এবং সমস্ত যানবাহনের ভাড়া থেকে ট্রামে মানুষ সস্তায় যাতায়াত করতে পারে, ট্রামে দুর্ঘটনা ঘটে না, আজও মানুষ পাঁচ টাকা ও ছটাকায় বহুদূর যেতে পারে ট্রামে করে, ট্রাম চললে কোন দূষণ হয় না, কিন্তু মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে ঘন্টার পর ঘন্টা, একটা ট্রামের জন্য, সময়মতো পায় না, সমস্ত রুটের ট্রাম গুলি ডিপোতে পড়ে নষ্ট হচ্ছে, রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে, আর ট্রামের জমি বিক্রি করার জন্য সরকার চিন্তা ভাবনা করছেন, হেরিটেজকে নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। একসময় যে ট্রাম কলকাতার মানুষের কাছে গর্বের যান ছিল। আজ তারা অবহেলিত,
তাই আমরা সকল জনগণের কাছে একটাই আবেদন করব, ট্রামকে ফিরিয়ে আনতে আপনারা রাস্তায় নামুন, আমাদের পাশে দাঁড়ান, মাফিয়াদের হাতে যাতে ট্রামের সম্পত্তি না চলে যায়, পুনরায় যাতে ট্রাম আগের মত অবস্থায় ফিরে আসে, সবাই একত্রিত হয়ে রুখে দাঁড়াই, আবার কলকাতার সৌন্দর্য ফিরে আসুক, ট্রাম প্রতিটি রুটে নতুনরূপে সেজে উঠুক, এটাই হবে কলকাতা বাসির কাছে বড় পাওনা অন্যান্য দেশের মতো। রাজাবাজার, বালিগঞ্জ, টালিগঞ্জ, কালীঘাট, শ্যামবাজার ,খিদিরপুর যে সকল ডিপোতে ট্রামগুলি পড়ে নষ্ট হচ্ছে , অবিলম্বে সেগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণ করে রুটে নামানো হোক।
রিপোর্টার, সমরেশ রায় ও শম্পা দাস, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ।