মোঃ বাদশা প্রামানিক (নীলফামারী):: নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের খগাখড়িবাড়ী দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোফাক্কারুল ইসলাম পেলবের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর নিজস্ব লোককে সভাপতি করার অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,খোগাখড়িবাড়ি দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর পুরাতন কমিটির মেয়াদ শেষ হলে স্কুল পরিচালনার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে এডহক কমিটি গঠনের নির্দেশনা আসে। এই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খগাখড়িবাড়ী দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে তিনজনের নামের তলিকা সুপারিশ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসে পাঠান। এ তিনজন হলেন, ১।আতিকুজ্জামান (বিঞ্জু) ২। আমির হোসেন ও ৩। মো: আব্দুল হান্নান। আতিকুজ্জামান বিঞ্জু প্রধান শিক্ষকের আপন খালাতো ভাই, আমির হোসেন প্রধান শিক্ষকের আপন ভগ্নিপতি তিনি প্রতিষ্ঠানটির সাবেক প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং মো: আব্দুল হান্নান প্রধান শিক্ষকের খালাতো ভাইয়ের কন্যার শশুর (তালোই) তিনিও বিদ্যালয়টির সাবেক প্রধান শিক্ষক ছিলেন
স্থানীয় অভিভাবকগণ বলেন, প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতি, নকলবাজী, মোবাইল ফোনে এসএমএস ও টাকার বিনিময়ে উত্তরপত্র সরবারহ, সিট প্লান পরিবর্তন ইত্যাদি অনিয়মের কারনে ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্র সচিবের পদ থেকে মোফাক্কারুল ইসলাম পেলবকে বরখাস্ত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন। কেন্দ্রটি বাতিল করে ডিমলা উচ্চ বিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে এসএসসি পরীক্ষা গ্রহন করেন।
অভিযোগকারী বাদশা বলেন, প্রধান শিক্ষক নিজেদের লোককে কমিটিতে সভাপতি হিসেবে আনতে পরলে নিজের খেয়ালখুশিমত বিদ্যালয় পরিচালনার চেষ্টা করছে এই জন্য আমরা অভিযোগ দিয়েছি। প্রধান শিক্ষক পেলব তার ভগ্নিপতি অথবা খালাতো ভাইকে বিদ্যালয়টির সভাপতি বানাতে চাচ্ছে। তাদের কমিটির দায়িত্ব দিলে বিদ্যালয় এর লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট সহ প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা বৃদ্ধি পাবে। আমরা এলাকাবাসী নিরপেক্ষ ও ভালো কোনো ব্যক্তিকে সভাপতি হিসেবে চাই। প্রধান শিক্ষক অযোগ্য লোকদের চাকুরি দিয়েছেন এবং চাকুরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে হয়রানি করছেন। তিনি স্কুলে নকল বাণিজ্য করে পরীক্ষার সেন্টারকে পরিবর্তন করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক পেলব নিজের আপনজনকে নিয়ে দূর্নীতি করে স্কুলটাক ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তার দূর্নীতির কারনে স্কুলের ছাত্রছাত্রী অনেক কমে গেছে। কেও তার বিরুদ্ধে কথা বললেই তাকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ভয় ভিতি দেখিয়ে দমিয়ে রাখে। আমরা এলাকবাসী তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে পারি না।
বন্দর খড়িবাড়ী গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, মোফাক্কারুল ইসলাম পেলব এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর টাকার বিনিময়ে অযোগ্য কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে বিপুল সম্পত্তির মালিক বনে গেছে। স্কুলটিতে সব সময়ে সে তার নিজ আত্মীয় স্বজন দিয়ে কমিটি করেছে। বর্তমানেও সে তার নিকট আত্মীয় স্বজন দিয়ে কমিটি করার চেষ্টা করতেছে। স্কুলের পরিবেশ বর্তমানে অনেক খারাপ হয়েছে। আমরা চাই নিরপেক্ষ কোনো ব্যক্তি দিয়ে স্কুলটির কমিটি করে স্কুলটি পরিচালিত হোক।
এই তিনজনের নামের তালিকা জমা দেওয়ার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে মোফাক্কেরুল ইসলাম পেলব বলেন, আতিকুজ্জামান বিঞ্জু আমার দূর সম্পর্কের খালাতো ভাই, আমির হোসেন আমার ভগ্নিপতি অপরজন আব্দুল হান্নানের সাথে আমার সম্পর্ক নেই তিনি স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
স্কুলের বিভিন্ন সময়ের দূর্নীতির বিষয়ে উঠা অভিযোগ তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলটির সভাপতি ও ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমরা হাতে পেয়েছি। স্কুলের কমিটির বিষয়টি ডিসি স্যার দেখেন। তিনিই কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।