মোঃ বাদশা প্রামানিক নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশে (টিসিবি) বিতরণকৃত চালের বস্তায় এখনো পুরনো সরকারের নাম ও স্লোগান বিদ্যমান রয়েছে।
বস্তাগুলোর গায়ে স্পষ্টলিখা ভাবে লেখা “শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ”। অথচ ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সরকারের পক্ষ থেকে এই নাম ও স্লোগান মুছে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হলেও, তা মানা হচ্ছে না স্থানীয় খাদ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে।
উপজেলার বিভিন্ন টিসিবি ডিলার পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, পুরনো সরকারের নাম ও স্লোগানসহ চালের বস্তা খোলামেলাভাবেই ডিলারদের বিতরণ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ও শ্রমিকরা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শুটিবাড়ী বাজারের কুলি শ্রমিক মো. মশিয়ার রহমান (৪০) বলেন, “৫ আগস্টের পর বস্তায় শেখ হাসিনার নাম মুছে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এখন আবার সেই নাম লেখা বস্তা আসছে।”
আরেক শ্রমিক মো. দুলাল হোসেন (৪৩) বলেন, “টিসিবির চালের বস্তায় এখনও পুরোনো সরকারের নাম থাকাটা আমাদের জন্য কষ্টের। আমি চাই, বস্তাগুলোতে বর্তমান সরকারের উপদেষ্টাদের নাম সংযুক্ত করা হোক।”
ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আশপাশের কয়েকটি উপজেলায় পুরোনো স্লোগান মুছে দেওয়ার কাজ শুরু হলেও ডিমলায় তেমন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রুহুল মোছাদ্দেক বলেন, “শেখ হাসিনা নাম ও স্লোগান থাকার কথা নয়। যদি এমন হয়ে থাকে, তবে এটা অন্যায়। বিষয়টি দেখার দায়িত্ব ওসি এলএসডির।” অন্যদিকে উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান মোহাম্মদ আজিজুল হাকিম বলেন, “নাম মুছে ফেলার কাজ চলমান। তবে অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছু বস্তা থেকে যেতে পারে। আমরা বিষয়টি দ্রুত সমাধান করছি।” তবে স্থানীয়রা মনে করছেন, “এটি প্রশাসনিক অবহেলা বা পরিকল্পিত ত্রুটি হতে পারে।”
গয়াবাড়ী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মাসুদ বলেন, “৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে জনগণ ফ্যাসিবাদী শাসন প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন যদি সরকারি চালের বস্তায় সেই রক্তচোষা শাসকের নাম দেখা যায়, তবে বুঝতে হবে, পুরোনো শাসনের প্রেতাত্মারা এখনো লুকিয়ে আছে। বিষয়টি কষ্টের।”
এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) সৈয়দ আতিকুল হক বলেন, “বস্তা পরিবর্তন এই মুহূর্তে করা কঠিন। কারণ, এত বস্তা হুট করে সরবরাহ করা সম্ভব নয়। তবে নাম ও স্লোগান মুছে ফেলার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমি নিজেই এলএসডিতে যাচ্ছি। নিশ্চিত করব, যেন পুরনো স্লোগান সম্বলিত বস্তা আর বিতরণ না হয়।” ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রাসেল মিয়া বলেন, “খাদ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।