1. admin@protidinnews.com : admin :
  2. info.popularhostbd@gmail.com : PopularHostBD :
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
উজিরপুরের বামরাইলে দীর্ঘ একযুগ পরে বিএনপি নেতা জিয়া আমিন রাড়ীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, নেতাকর্মীদের ঢল দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের ডাকে, কলকাতা প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলন করলেন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত ৫ কলকাতা নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হলো, ইসকনের জগন্নাথ মহাপ্রভুর স্নান যাত্রা উৎসব সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার  সলঙ্গাতে মোটরসাইকেল আরোহী নিহত ডিমলা থানায় ধর্ষণের চেষ্টা মামলার অভিযোগ না নেওয়ায় ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন গৌরনদীতে জিয়া সাইবার ফোর্স এর পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা সিরাজগঞ্জের- ৩ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর  মনোনীত প্রার্থী প্রফেসর শায়েখ ড. আব্দুস সামাদ জানায় পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা  ইউনাইটেড টিচিং অ্যান্ড নন টিচিং ফোরামের উদ্যোগে, ন্যায্য বিচার ও অধিকারের দাবীতে ধিক্কার মিছিল ও পথসভা বরানগর ন – পাড়া দাদাভাই সংঘের খুঁটিপুজো ২২তম বর্ষে পদার্পণ করল

রাজধানী এখন দাবির শহর

অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

রাজধানী ঢাকা রীতিমতো দাবির শহরে পরিণত হয়েছে। ছোট-বড় যে কোনো ইস্যুতে মুহূর্তেই উত্তাল হয়ে উঠছে রাজপথ। প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে মিছিল, সমাবেশ, অবরোধ, ঘেরাও ও আলটিমেটাম দেওয়ার মতো কর্মসূচি। শুধু রাজপথই নয়, প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরও এর বাইরে নেই। এসব কর্মসূচি ঘিরে ব্যস্ততম নগরীজুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে একরকম অচলাবস্থা। যানজট যেন নগরবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী। চরমে উঠেছে জনকষ্ট। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেখা যাচ্ছে এমন চিত্র। কখনো থেমে থেমে আবার কখনো বিরতিহীনভাবে পালিত হয় এসব কর্মকাণ্ড। কিন্তু একরকম নির্বিকার কর্তৃপক্ষ। যদিও এগুলো থামাতে একাধিকবার দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। আন্দোলনকারীদের দমাতে রবার বুলেট, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, লাঠিচার্জসহ নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। কিন্তু আসেনি কোনো ইতিবাচক ফল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আন্দোলন যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে, ঠিক তখনই চাপের মুখে নতি স্বীকার করছে সরকার। তড়িঘড়ি করে মেনে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ দাবি। অথচ আন্দোলনের শুরুতে উদাসীনতা না দেখিয়ে সহজেই করা যেত সমস্যার সমাধান। আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনে তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। ফলে পরিস্থিতি শান্ত হচ্ছে না। কয়েক দিন বিরতি দিয়ে দাবি-দাওয়া নিয়ে হাজির হচ্ছে অন্য প্রতিষ্ঠান। আবার উত্তপ্ত হচ্ছে রাজপথ। এমন হযবরল অবস্থা যেন রাজধানীর ‘স্থায়ী সংস্কৃতি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোববারও এর ব্যত্যয় হয়নি। এদিন চাকরিচ্যুত সেনাসদস্যদের জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি, দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে ইশরাকের শপথের ব্যবস্থা করাতে টানা চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ, সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগ থানা ঘেরাও, শাহবাগ মোড় অবরোধ এবং অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে খুনিদের খুঁজে বের করতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে সাদা দল। এছাড়া জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি, বেতনের দাবিতে মাউশি ঘেরাও, বিজয়নগরে বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের ঘোষণা না দিলে দেশ অচলের ঘোষণা শ্রমিকদের, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের কাফনের কাপড় নিয়ে মিছিল, হাইকোর্টের মাজার গেটের সামনে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। সবমিলিয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য স্পষ্টতই সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও অদক্ষতা প্রকাশ পাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সাম্য হত্যার বিচার দাবি

ফের শাহবাগ থানা ঘেরাও, ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবিতে রোববার ফের শাহবাগ থানা ঘেরাও করেছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি ও জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এছাড়াও বিচার দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। দুপুর ১টার দিকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ থানার সামনে অবস্থান নেন তারা।

সরেজমিন দেখা যায়, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা থানা ঘেরাও করে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন এবং সাম্য হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল শাহবাগ থানায় যায়। দীর্ঘসময় বৈঠক শেষে থানা থেকে বেরিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলটি। এতে আইইআর-এর অধ্যাপক সিরাজ আহমেদ বলেন, সাম্য হত্যায় দোষীদের ধরতে থানায় কথা বলা হয়েছে। তারা কাজের অগ্রগতি আমাদের জানিয়েছেন। একজনকে নতুন করে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। বিশেষ ট্রাইব্যুনালে হত্যার বিচার করা হবে।

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নিয়াজ আহমদ খান ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. সাইফুদ্দিন আহমদ খান। তারা দ্রুত বিচার ও প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা দুপুর ১টার দিকে শাহবাগ থেকে সরে যান।

উপাচার্য ড. মো. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, সাম্য হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আপনারা ধৈর্য ধরুন। আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বসব। সেখানে মামলার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে এবং দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সাম্যের বড় ভাই এসএম শরিফুল আলম বলেন, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে যেন আমার ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে কোনো প্রহসন বা কালক্ষেপণ না করা হয়। পাশাপাশি কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে যেন এ মামলায় জড়ানো না হয়। প্রকৃত অপরাধীরা যেন সর্বোচ্চ শাস্তি পায়, সেটিই আমাদের একমাত্র দাবি।

সাদা দলের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম : সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি ও জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এ সময়ের মধ্যে প্রকৃত খুনিকে বের করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন থেকে এ আলটিমেটাম দেন তারা।

সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, সাম্য হত্যার আজ পাঁচদিন পূর্ণ হলো। আমরা ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিচ্ছি। যদি সাম্য হত্যার প্রকৃত খুনিদের বের করা না হয়, আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যাব। আমরা কারও ব্যক্তিস্বার্থে কাজ করব না। সাম্য হত্যার মোটিভকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করতে চাচ্ছে একটা গ্রুপ। এটা না ওটা, ওটা না এটা। আগে সাম্য হত্যার বিচার হবে। আগে অ্যারেস্ট করা হবে। তারপর আমরা অন্য আলাপ করব। তিনি বলেন, দুমাস আগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে, তারও কোনো বিচার হয়নি। সংস্কারের বুলি আওড়াচ্ছে সরকার; কিন্তু কোনো অগ্রগতি আমরা লক্ষ করছি না। শুধু গুম, খুন, শেয়ারবাজারের ধস এবং আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি।

সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নিরাপদ করতে হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ব্যবস্থাপনা ঢাবির কাছে হস্তান্তর করতে হবে। কারণ, এখানে নানা ধরনের অপকর্ম হয়। এর দায় তো ঢাবি নেবে না। তাই এটাকে ঢাবির আন্ডারে আনা হোক।

শাহবাগ অবরোধ ছাত্রদলের : সাম্য হত্যা মামলার তদন্তে গাফিলতির প্রতিবাদে এবং মূল হত্যাকারীকে গ্রেফতারের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। রোববার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে তারা শাহবাগ অবরোধ করেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ‘বিচার বিচার বিচার চাই, সাম্য হত্যার বিচার চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন। শাহবাগ মোড়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, প্রাইমএশিয়ার শিক্ষার্থী পারভেজের মতো একই কায়দায় চুরিকাঘাতে সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে। এখনো পারভেজ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। আমরা আজকের এ অবস্থান কর্মসূচি থেকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, আমাদের আর কোনো কর্মীর ওপর হামলা হলে আমরা আর বসে থাকব না।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় প্রশাসন এখনো তাদের দায় এবং নিরাপত্তার গাফিলতির কথা স্বীকার করছে না। তারা এখনো আমাদের আশ্বস্ত করতে পারেনি সাম্য হত্যার বিচার করবে কি না।

ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যার তদন্ত ডিবিতে ন্যস্ত : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার তদন্ত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রোববার ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগে কাজ চলছে। দ্রুত গুরুত্ব দিয়ে সাম্যের খুনিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে রোববার বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর দপ্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দেখা করতে গেলে তিনি সাম্য হত্যার তদন্তভার ডিবিতে হস্তান্তরের আশ্বাস দিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম বলেন, আমরা চাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাম্য হত্যার সুষ্ঠু বিচার হোক। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আমাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন ও আশ্বাস দিয়েছেন।

মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি

আজ নগরভবন ব্লকেড ইশরাক সমর্থকদের

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আজ ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবেন তার সমর্থকরা। রোববার নগরভবনের সামনে চতুর্থ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি থেকে বিক্ষুব্ধ ঢাকাবাসীর পক্ষে এ ঘোষণা দেন সাবেক সিনিয়র সচিব মশিউর রহমান।

ইশরাকের সমর্থরা জানান, আজ বেলা ১১টা থেকে নগরভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ব্লকেড কর্মসূচি শুরু হবে, চলবে বেলা ৩টা পর্যন্ত। রোববার সকাল ৯টা থেকে নগর ভবনের সামনে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে আসেন ইশরাকের সমর্থকরা। তারা নগরভবনের ফটকগুলোয় অবস্থান নেন। ভেতরের বিভিন্ন ফটকে ঝুলিয়ে দেন তালা। এতে নগরীর স্বাভাবিক কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়ে। নগরভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি নগরভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে গোলাপ শাহ মাজার হয়ে গুলিস্তান, প্রেস ক্লাব, শিক্ষাভবন প্রদক্ষিণ করে আবার নগরভবনের সামনে আসে। নগরভবনের প্রধান ফটক ও সামনের সড়কে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে নিজেদের দাবির কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে-‘শপথ চাই শপথ চাই, ইশরাক ভাইয়ের শপথ চাই’, ‘শপথ নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘অবিলম্বে ইশরাক হোসেনের শপথ চাই, দিতে হবে’, ‘জনতার মেয়র ইশরাক ভাই, অন্য কোনো মেয়র নাই’ ইত্যাদি। পাশাপাশি আন্দোলনকারীরা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধেও নানা স্লোগান দেন। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ইকশরাক সমর্থকদের কয়েকজন জানান, ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে টালবাহানা করছে সরকার। আর এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বুধবার থেকে কর্মসূচি পালন করে চলেছেন তার সমর্থকরা। সেদিন থেকেই ডিএসসিসি নগরভবন কার্যত অচল।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনো হয়নি।

চাকরিতে পুনর্বহালসহ ৪ দাবি

প্রেস ক্লাবের সামনে চাকরিচ্যুত সেনা সদস্যদের বিক্ষোভ

চাকরিতে পুনর্বহালসহ চার দাবিতে রোববার দুপুর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছেন চাকরিচ্যুত সেনা সদস্যরা। প্রায় আট ঘণ্টা পর দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা।

এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে আন্দোলনকারীদের আট সদস্যের প্রতিনিধিদল। বৈঠক শেষে চাকরিচ্যুত সৈনিক মো. কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতার নাইমুলসহ অন্যদের ছাড়িয়ে আনতে আজ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ১০ বছরের নিচে যেসব সৈনিকের চাকরির বয়স ছিল, তাদের পুনর্বহালের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। যাদের চাকরির বয়স নেই, তাদের পেনশনের আওতাভুক্ত করা হবে। তবে নাইমুলসহ অন্যদের মুক্তি না দিলে ফের কর্মসূচি দেওয়ার কথা জানিয়ে সবাইকে ঢাকায় অবস্থান করতে বলেন তিনি।

বেলা ১২টা থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় তারা দাবি মানা না হলে জাহাঙ্গীর গেটের উদ্দেশে লংমার্চ করার হুঁশিয়ারি দেন। বাংলাদেশ সহযোদ্ধা প্ল্যাটফর্মের (বিসিপি) আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় প্রেস ক্লাবের ভেতরে-বাইরে বিপুলসংখ্যক সেনা সদস্য মোতায়েন ছিলেন।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে তুচ্ছ কারণে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর এক হাজারের বেশি সদস্য চাকরিচ্যুত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সৈনিক থেকে অনারারি ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তা রয়েছেন। চাকরিচ্যুতির সময়ে কাউকে কোনো ধরনের সার্ভিস বেনিফিট পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। তাদের দাবিগুলো হলো-চাকরিচ্যুত সময় থেকে সম্পূর্ণ বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল; কাউকে পুনর্বহাল করা সম্ভব না হলে সরকারি সব সুযোগ-সুবিধাসহ সম্পূর্ণ পেনশনের আওতায় আনা; যে আইনি কাঠামো ও বিচারব্যবস্থার প্রয়োগে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, সেই বিচারব্যবস্থা ও সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৪৫ সংশোধন করা। এছাড়া সম্প্রতি গ্রেফতার আন্দোলনের অন্যতম মুখ্য সমন্বয়ক নাইমুল ইসলামকে মুক্তি।

সরেজমিন দেখা যায়, বেলা ১২টার দিকে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। এ সময় পুলিশের একটি জলকামানও সেখানে দেখা যায়। তবে পুলিশ কোনো ধরনের লাঠিচার্জ করেনি। একপর্যায়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের জানানো হয়, সেনা সদর দপ্তর থেকে একটি প্রতিনিধিদল তাদের সঙ্গে কথা বলতে আসছে। পরে দুপুর ২টায় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রেস ক্লাবে আসে। আন্দোলনকারী একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দীর্ঘ সময় বৈঠক করে ঊর্ধ্বতন সেনা প্রতিনিধিদল। বৈঠকে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলমও ছিলেন। বিকাল সাড়ে ৩টায় বৈঠক শেষে সেনা সদর দপ্তরের প্রতিনিধিদল বের হয়ে আন্দোলনকারীদের জানায়, তাদের দাবিগুলো যুক্তিসহকারে দেখা হবে? তারা যেন তাদের চাকরি ফেরতের আবেদন সেনা সদর দপ্তরে জমা দেন। এছাড়া সোমবার (আজ) আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদলকে সদর দপ্তরে কথা বলতে আমন্ত্রণ জানান। এ সময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমান বলেন, যাদের ছোট অপরাধে চাকরি গেছে, তাদের একজন একজন করে চাকরি ফেরত দেওয়া হবে। তবে যাদের অপরাধ গুরুতর, তাদের চাকরি ফেরতের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। যদি সম্ভব হয়, সেটি ফেরত দেওয়া হবে। এছাড়া গ্রেফতার সৈনিকদের মুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রধান সমন্বয়ককে গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা আইনগত বিষয়। তাকে আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সহায়তা করা যায়, আমরা করব।

পরে চাকরিচ্যুত নৌবাহিনীর নাবিক বাহাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, নয় মাস ধরে আমাদের দাবি জানিয়ে আসছি। কোনো সমাধান না দিয়ে কালক্ষেপণ করায় আমরা অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছি। তাদের প্রতি বিশ্বাস রেখে আমরাও ধৈর্য ধরব।

কিন্তু মৌখিক আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত না করে প্রতিনিধিদলের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন আন্দোলনকারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। এ সময় তারা স্লোগান দিতে থাকেন। পরে সেনাবাহিনীর মেজর শাহানুর আন্দোলনকারীদের আট সদস্যের প্রতিনিধিদলকে আবারও ডেকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনটি বিষয়ে সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিত করেন।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুরো সময় বিষয়টি মনিটরিং করেছি।

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকদের মাউশি ঘেরাও

শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ঘেরাও করেছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় মাউশির সামনে এসে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। দুপুর পর্যন্ত তারা সেখানে ছিলেন। এদিকে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের করা একটি রিট আবেদন বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টের সামনে বিক্ষোভ করেছেন দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথমে মাধ্যমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করতে হবে। সব বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণা দিতে হবে। এছাড়া আর্থিক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সব বৈষম্য ঘুচিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করার দাবি তাদের।

এমপিওভুক্ত একজন শিক্ষক বলেন, সরকারের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী মাসের ১ তারিখে বেতন পেয়ে যান। কিন্তু শিক্ষকরা বেতন পান মাসের অর্ধেক যাওয়ার পর। বিভিন্ন সময় আরও দেরি হয়। অথচ আমরা সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো সব ধরনের পরিশ্রম করি। তবে সুযোগ-সুবিধার বেলায় বঞ্চিত হই। তাই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সব ধরনের শিক্ষা জাতীয়করণ চাই।

এর আগে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ, উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ও বাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন দাবিতে টানা ২২ দিন ধরে আন্দোলন করেন শিক্ষকরা। পরে মার্চের শুরুতে তাদের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।

হাইকোর্টের সামনে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ : দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গণের মাজার গেটের সামনে অবস্থান নেন। তারা ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের করা একটি রিট আবেদন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. মাশফিক ইসলাম দেওয়ান বলেন, ক্রাফট ইনস্ট্রকটরদের পদোন্নতির রায়ের ওপর আপিল শুনানি হচ্ছে। আপিল বিভাগ ইতোমধ্যে রায়টি স্থগিত করেছেন। সেটি চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য এখন শুনানি হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। চূড়ান্ত রায় জানতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আমাদের এই অবস্থান। আমরা আশা করি আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া রায়টি বাতিল করবেন। আমরা সে অপেক্ষায় আছি।

এর আগে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে পদোন্নতির জন্য ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পক্ষে যে রিট আবেদন করা হয়েছে, তাকে ‘কালো রিট’ আখ্যায়িত করেছিলেন মাশফিক ইসলাম দেওয়ান।

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved
Design BY POPULAR HOST BD