কক্সবাজার সরকারি হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মারধরের শিকার হয়েছেন ডা. সজীব কাজী নামে এক চিকিৎসক। ঘটনার পর রাত ১টা থেকে কক্সবাজার সরকারি হাসপাতাল জরুরি বিভাগসহ কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল অফিসাররা।
হামলার শিকার সজীব হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও সিসিইউতে কর্মরত ছিলেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রোগীর মৃত্যুর পর আত্মীয়স্বজন সিসিইউতে প্রবেশ করে প্রথমে ভাঙচুর চালায়। পরে চিকিৎসক সজীবকে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে মারতে মারতে চারতলা থেকে নিচে নামিয়েও মারধর করতে থাকে। এ সময় হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে অন্য চিকিৎসকরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। রাত ১টার দিকে চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিতে জরুরি বিভাগসহ কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
কক্সবাজার হাসপাতালের সব ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং মেডিকেল অফিসাররা জানিয়েছেন, হাসপাতালে চিকিৎসকের কোনো নিরাপত্তা নেই। কোনো কারণ ছাড়াই হামলার শিকার হতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। রাতে একজন চিকিৎসককে অমানবিকভাবে মারধর করা হয়েছে। যেভাবে তাকে মারা হয়েছে তাতে তার মৃত্যু হতে পারত। আল্লাহ তাকে রক্ষা করেছেন। তাই যতক্ষণ ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হবে ততক্ষণ আমরা কর্মবিরতি করব।
তারা সেনাবাহিনী মোতায়েন করে সব ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, রাতে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দায়িত্বরত চিকিৎসক সজীবের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসকরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে এখন জরুরি বিভাগসহ সব ধরনের সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। ডাক্তার সেবা না দিলে সমস্যা তো হবেই। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের।
এদিকে ডাক্তারদের ওপর হামলার খবর পেয়ে গভীর রাতে হাসপাতালে ছুটে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কয়েকজন। তারা ডাক্তার ও রোগীদের নিরাপত্তায় সেখানে অবস্থানের কথা জানিয়েছেন।
খবর পেয়ে বুধবার সকালে সেনাবাহিনীর একটি টিম হাসপাতালে আসেন এবং ডাক্তারসহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চালু করা হয়।